অনেক সময় বাচ্চারা অসুস্থ হলে কাশির শব্দ বিশ্রী শুনা যায় । অনেকটা সামুদ্রিক সীল (seal) এর ডাকের মত , অনেকে এটাকে Barking cough বলে থাকেন । এই ধরনের কাশির সাথে গলার স্বর কর্কশ (Hoarse voice ) হয়ে যাওয়া , শ্বাসকষ্ট হওয়া এবং শ্বাস টেনে ভেতরে নেবার সময় এক ধরনের শব্দ ( Stridor) থাকতে পারে । এই সমস্যা হঠাৎ করেই দেখা দেয় । কাশি রাতের বেলায় বেড়ে যায় । সাধারণত ৩ থেকে ৫ বছরের বাচ্চারা বেশী আক্রান্ত হয় । চিকিৎসার ভাষায় এই অসুস্থতাকে ক্রোপ (Croup ) বলে হয় । সাধারণত শ্বাসনালীর ভাইরাস সংক্রমনের মাধ্যমে এই উপসর্গ তৈরী হয় , প্যারাইনফ্লোয়েঞ্জা ভাইরাস সংক্রমন অন্যতম একটি কারন ।
বাচ্চার হালকা জ্বর থাকতে পারে , উচ্চ মাত্রার জ্বর সাধারণত দেখা যায় না । সেই সাথ বাচ্চার খাওয়ার প্রতি অনীহা দেখা দেয় ।
শ্বাস টেনে ভেতরে নেবার সময় যে শব্দ ( Stridor) হয় সেটা ভোকাল কর্ডের নীচের অংশের শ্বাস নালীর প্রদাহজনীত সংকোচনের কারনে হয়ে থাকে । শ্বাস ছাড়ার সময়ও সামান্য শব্দ ( Wheeze ) হতে পারে । শ্বাস নালীস্থ ট্রাকিয়া এবং গ্লটিস এর প্রদাহের কারনে কাশির শব্দ সামুদ্রিক সীলের ডাকের মত শুনা যায় (Barking cough ) । ক্রোপ এ আক্রান্ত হলে বাচ্চার শ্বাসের গতি বেড়ে যায় , শ্বাস নেবার সময় বক্ষপাজরের উপরের ও নীচের অংশ ভেতরে ঢুকে যায় , পাজরের হাড়ের মাঝখানে অংশও ভেতরের দিকে ঢুকে যেত দেখা যায় । বাচ্চার অক্সিজেন স্বল্পতার কারনে শরীর নীল বর্ণ ধারন করতে পারে ।
ক্রোপ হলে বাচ্চাকে শান্ত রাখতে হবে । কান্না করলে তার উপসর্গ বেড়ে যেতে পারে । শুইয়ে না রেখে সোজা করে বসিয়ে রাখতে উচিৎ । প্রচূর তরল খাবার খাওয়াতে হবে ।
বাচ্চাকে বাস্প শ্বসন বা Steam inhalation করানো থেকে বিরত থাকতে হবে । কাশির ও সর্দির সাধারণ ঔষধ সেবন করানো উচিৎ নয় ।
চিকিৎসকের পরমর্শ অনুযায়ী বাচ্চাকে জ্বরের ঔষধ ও অক্সিজেন দেয়ার প্রোয়োজন পড়তে পারে । স্বল্প মাত্রার ক্রোপ এক ডোজ স্টেরয়েড জাতীয় ঔষধ দিয়ে চিকিৎসায় নিরাময় হয়ে যায় । গুরুতর ক্রোপ দেখা দিলে স্টেরয়েডের সাথে নেবুলাইজড ইপিনেফ্রিন ব্যবহার করা হয় ।
বাচ্চাকে বাস্প শ্বসন বা Steam inhalation করানো থেকে বিরত থাকতে হবে । কাশির ও সর্দির সাধারণ ঔষধ সেবন করানো উচিৎ নয় ।