গরুর মাংস স্বাস্থ্যের জন্য কতটুকু উপকারী ?

Must Read

গরুর মাংস বা রেড মিট , আমাদের অনেকেরই প্রিয় খাবার । কেউ কেউ এত বেশী পছন্দ করেন যে নিজেকে সামলিয়ে রেখে পরিমান ঠিক রেখে খাওয়া কঠিন হয়ে উঠে । শুধু বাংলদেশেই নয় গো-মাংস বা এ জাতীয় রেড মিট সারা বিশ্বেই অনেক জনপ্রিয় ।।

প্রথম কথা যা মনে রাখতে হবে তা হল এই গরুর মাংস হল একটি অতী ভাল আমিষ বা প্রোটিন খাদ্য উৎস । প্রোটিন জীবনের জন্য অত্যাবশ্যকীয় এটা আমরা জানি । যদি পর্যাপ্ত প্রোটিন খাওয়া বন্ধ করে দেন তাহলে দেহের কোষ সমূহ দ্রুত ক্ষয়প্রবন হয়ে পড়বে । এতে করে আপনি বয়সের আগেই বয়স্ক হয়ে যাবেন বা বুড়িয়ে যাবেন । কারন আমাদের মাংসপেশী , অংগ প্রত্যঙ্গ , চামড়া সবকিছুর জন্য প্রোটিন প্রয়োজন । তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন হল আমাদের রক্তের এন্টিবডি যা কিনা রোগ প্রতিরোধের প্রধান হাতিয়ার সেই এন্টিবডি আসলে তৈরী হয় মূলত প্রোটিন থেকে । সেই সাথে সবধরনের এনজাইম যা শরীরের রাসায়নিক কার্যকলাপে (যেমন হজম প্রক্রিয়া থেকে দেহকোষ নির্মান প্রক্রিয়া) নিয়োগপ্রাপ্ত সেই এনজাইমও আসলে প্রোটিন দিয়ে তৈরী হয়ে থাকে । প্রোটিন আমাদের খাদ্যনালিতে বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভেঙ্গে গিয়ে এমাইনো এসিডে পরিনত হয় । এমাইনো এসিড আবার খদ্যনালীর দেয়ালের ভিতর দিয়ে প্রবেশ করতে পারে এবং এভাবে তা রক্তে চলে যায় । তখন দেহকোষ এমাইনো এসিডকে নিজেদের কাজে ব্যবহার করে বিশেষ করে সেল রিপেয়ার বা কোষ পূনঃগঠনে । এটা মনে রাখতে হবে যে এই জাতীয় প্রোটিন আমরা অন্য প্রানীজ উৎস থেকেও পেতে পারি , যেমন হাঁস-মুরগি ও মৎস । উদ্ভিদ থেকেও প্রোটিন পাওয়া যায় তবে তা প্রানীজ উৎসের মত সমৃদ্ধ নয় ।


এই পর্যায়ে আপনি গো-মাংস খাবার ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে উঠতেই পারেন । তবে কিছু কথা মনে রাখতে হবে যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং গো-মাংস খাবার ব্যাপারে আমাদের সাবধানী করে তুলবে।

গো-মাংসে থাকে প্রচূর সেচুরেটেড ফেট বা চর্বি । এটি প্রমাণিত যে এই ধরনের চর্বি বেশি খাওয়া আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর । একই ধরনের চর্বি হাঁস-মুরগীতেও আছে, তবে কম মাত্রায় , তাই হাঁস-মুরগীর মাংস চামড়া ছাড়া খাওয়া উচিৎ কারন চামড়ার নিচে প্রচূর সেচুরেটেড ফেট থাকে এবং হাঁস-মুরগীর গঠন যত পাতলা হবে ততই এই সেচুরেটেড ফেট কম থাকবে । গবাদি পশুদের অনেক সময় এন্টিবায়োটিক খাওয়ানো হয় , বা এদের দেহে হরমোন প্রবেশ করানো হয় , এসব পশুর মাংসও আমাদের ক্ষতি করবে এতে কোন সন্দেহ নেই । এই বিষয়টি হাঁস-মুরগীর মাংসের ক্ষেত্রেও একই ভাবে সত্য । বিশেষ করে গবাদি পশুদের গ্রোথ হরমোন দিয়ে মোটা-তাজা করার একটি প্রবনতা দেখা যায় । কাজেই অস্বাভাবিক বৃহদাকার গরু কেনার আগে এই বিষয়টি জেনে নেয়া অতীব জরুরী । এন্টিবায়োটিক ও হরমোন দেয়া হয় নি এমন গরুই আমাদের খুঁজে বের করতে হবে । মনে রাখতে হবে একই মাংস আপনার পরিবারের শিশু এবং বৃদ্ধরাও খাবেন যাদের শরীরের সহনশীলতা কম থাকে ।।

 মজার ব্যাপার হল অনেকেই মহিষের মাংস পছন্দ করেন না , আসলে গরুর মাংস আর মহিষের মাংসের স্বাদে খুব বড় ধরনের পার্থক্য নেই । তবে মহিষের মাংস গরুর মাংসের চেয়ে মানব স্বাস্থ্যের দিক বিবেচনায় অনেকাংশেই নিরাপদ ।

একটি প্রচলিত কথা আছে , প্রানীজ খাবারের ক্ষেত্রে যার পা যত কম তার ক্ষতিকর দিকও তত কম । তাই সবচেয়ে ভাল অবস্থানে আছে মৎস প্রজাতি । এদের পা নেই এবং এরাই নিরাপদ প্রানীজ প্রোটিনের উৎস । খেয়াল রাখবেন , চিংড়ি মাছের আবার অনেকগুলি পা , কাজেই নামের সাথে মাছ থাকলেও ওগুলি তেমন নিরাপদ নয় । চিংড়িতে প্রচূর খারাপ চর্বি থাকে ।

আপনার মনে প্রশ্ন আসতে পারে , আরে এত সমস্যা তাহলে প্রনীজ প্রোটিন আর না খেয়ে শাকাহারী হয়ে গেলেই হয় । শাকাহারীদের খাবারে অনেক খাদ্য উপাদান অনুপস্থিত থাকে যা শরীরের জন্য একান্ত প্রয়োজন । পূর্নাংগ প্রোটিন উদ্ভিদ থেকে পাওয়া সম্ভব নয় , উদ্ভিজ্জ খাবারে আরো আনুপস্থিত থাকে আয়রন , ভিটামিন বি ১২ ইত্যাদি ।

একটি প্রচলিত কথা আছে , প্রানীজ খাবারের ক্ষেত্রে যার পা যত কম তার ক্ষতিকর দিকও তত কম । তাই সবচেয়ে ভাল অবস্থানে আছে মৎস প্রজাতি । এদের পা নেই এবং এরাই নিরাপদ প্রানীজ প্রোটিনের উৎস । খেয়াল রাখবেন , চিংড়ি মাছের আবার অনেকগুলি পা , কাজেই নামের সাথে মাছ থাকলেও ওগুলি তেমন নিরাপদ নয় । চিংড়িতে প্রচূর খারাপ চর্বি থাকে ।

Dr. Sharif

- Advertisement -spot_img
- Advertisement -spot_img

Latest News

বাসায় অক্সিজেন – কোভিড ১৯ ভাইরাস আক্রান্ত রোগীর জন্য কখন উপযোগী ?

কোভিড ১৯ ভাইরাসের সংক্রমন বেড়ে যাবার সাথে সাথে হাসপাতালে বেড স্বল্পতার কারনে অনেক রোগীকে হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা দেয়া সম্ভব...
- Advertisement -spot_img

More Articles Like This

- Advertisement -spot_img